1. bortomanlaxmipur@yahoo.com : বর্তমান বাংলা : বর্তমান বাংলা
  2. sdkladmin@bortomanbangla24.com : :
  3. nbkcadmin@bortomanbangla24.com : dipu : Web Master
  4. ptunadmin@bortomanbangla24.com : :
  5. pghxadmin@bortomanbangla24.com : :
শিরোনাম
বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাসীদের মোকাবেলা করতে যুবলীগই যথেষ্ট- হাবিবুর রহমান পবন শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে জেলা কৃষক লীগের উদ্যোগে লক্ষ্মীপুরে দোয়া ও মিলাদ রামগঞ্জে এতিমের দোহাই দিয়ে চাচার সম্পত্তি জবরদখলের অভিযোগ ভাতিজিদের বিরুদ্ধে লক্ষ্মীপুরে মহালয়া উদযাপনের মধ্য দিয়ে দূর্গা পুজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু মামলাবাজের কবল থেকে বাঁচতে প্রশাসনিক আনুকল্য চায় চররুহিতার আজগর নবাগত পুলিশ সুপারের সাথে লক্ষ্মীপুর জেলার সুশীল সমাজের মতবিনিময় পেশাদার রাজনৈতিক নেতা হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারত সম্পর্কে এমন কথা পাবলিক প্লেসে বলতেন না- হারুনুর রশিদ বেপারী জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে লক্ষ্মীপুরের এসপিকে বিদায় সংবর্ধনা নেতা-কর্মীদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতিতে লক্ষ্মীপুরে আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ জাতীয় শোক দিবসে ১২ হাজার লোককে মধ্যাহৃ ভোজ করালেন লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র মাসুম ভূঁইয়া

সুন্দরী নারীর অনেক বিড়ম্বনা – নাছিমা মুন্নী

  • আপডেট সময়: সোমবার, আগস্ট ৩০, ২০২১
  • 459 মোট পড়া হয়েছে:

বর্তমান বাংলা টুয়েন্টিফোর ডেস্কঃ ফ্যাশন ম্যাগাজিন, নিউজপেপারগুলো। তাদের এই প্রচেষ্টাকে কাজে লাগিয়েছে বিভিন্ন বানিজ্যিক পণ্য প্রতিষ্ঠান। সৌন্দর্যহীনতার হীনম্মন্যতা সৃষ্টির মাধ্যমে বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানগুলো প্রথমে নারীকে শেখাচ্ছে নিজের চেহারাকে সুন্দর করতে। নারীর আত্মবিশ্বাসকে প্রথমে ভেঙে চুরমার করে দিয়ে তারপর তাদের উদ্বুদ্ধ করছে রং ফর্সাকারী পণ্য ব্যবহারের মাধ্যমে পুনরায় আত্মবিশ্বাস অর্জন করতে। যা নারীকে আরও অস্থির করে তুলছে। এতে নারীকে হীনমন্যতায় ভোগাচ্ছে।
যে পরিবারের মেয়েরা দেখতে খুব সুন্দর হয়, সেসব পরিবারের অভিভাবকরা খুব অহংকারী হয়। আর সেসব পরিবারের মেয়েরা আত্ম অহামিকায় নার্সিসিস্ট হয়ে ওঠে। সেসব মেয়েরা নিজের শিক্ষা, মেধাকে সমৃদ্ধ করার চেয়ে নিজের সৌন্দর্যের পরিচর্যা নিয়ে বেশিই ব্যস্ত থাকে। এতে পরবর্তীতে হীতে বিপরীত হয়।
সবসময়ই নারীর সকল সৌন্দর্য মূলত তার আত্মবিশ্বাসে। আর আত্মবিশ্বাস থেকেই সৃষ্টি হয় নারীর প্রকৃত সৌন্দর্য। নারীর সৌন্দর্য নয় বরং ব্যক্তিত্ব অনুযায়ী নিজেকে উপস্থাপন করতে পারাই নারীর অধিকার। আমাদের দেশে ফিল্মের হিরোইনদের অনেক সুন্দরী এবং মেকআপের প্রলেপে ভরপুর দেখা যায়। সময় এসেছে এখন হিরোইনদের ন্যাচারাল লুক দেখিয়ে তাদের যোগ্যতা আর মেধা তুলে ধরার। আমাদের মেয়েরা যেন যোগ্যতা সম্পন্ন কোনো কেন্দ্রীয় চরিত্রের নায়িকাকে দেখে নিজেকে সে স্বপ্নের জায়গায় দাঁড় করাতে পারে। বেশি বেশি করে আমাদের দেশের ফিল্মে কেন্দ্রীয় চরিত্রে যোগ্যতাসম্পন্ন একজন নারীকে তুলে ধরে ফিল্ম তৈরি করা খুব দরকার।
রং ফর্সাকারী ক্রিম, হাইহিল জুতো, কিংবা লিপিস্টিক আর চোখে কাজলের ভারে চাপিয়ে দেওয়া অস্তিত্ব যেন কেড়ে না নেয় নারী প্রকৃত সৌন্দর্য, গতিশীলতা আর আত্মবিশ্বাস। নারীর সৌন্দর্য তার নিজস্বতায়, তার স্বকীয়তায়। নারীর সৌন্দর্য তার অনুভবের স্বাধীনতায়। নারীর সৌন্দর্য তার মুক্তিতে। নারী সৌন্দর্য তার যোগ্যতায়। এখুনি সময় এসেছে নারীর সৌন্দর্যকে নতুনভাবে রূপায়িত করার।
আমাদের সমাজ নারীর গতিশীলতা পছন্দ করে না। সময় পেরিয়ে গেছে। ঘটেছে অনেক বিবর্তন। সাধিত হয়েছে উন্নয়ন আর পরিবর্তন। পৃথিবী বিবর্তনের সাথে সাথে নারী আজ পৌঁছে গেছে মহাকাশে। পৌছেছে এভারেস্টের চূড়ায়। তবুও নারীর সৌন্দর্যের সংজ্ঞার কোনো পরিবর্তন অদ্যাবধি আসেনি।
জীবনে ভালবাসা বা প্রেম সম্পর্কে ধারণা তৈরি হয় আমাদের নাটক, সিনেমা দেখেই। আর সবসময় সিনেমায় দেখানো হয় নায়ক সেই মেয়ের প্রেমেই পড়ে, যে রোগা, আকর্ষণীয়, লম্বা, সুন্দরী। সবসময় মেয়েদের ওপর সুন্দর হওয়ার খুব চাপ থাকে। কে কত কি করে, কত সুন্দরী, আকর্ষণীয় হওয়া যায় তার যেন প্রতিযোগিতা চলে। মেয়েদের বিয়ের জন্য পাত্রী হোক বা প্রেম হোক, কর্পোরেট জব হোক সব সময়ই খোঁজা হয় রোগা, ফর্সা, আকর্ষনীয় সুন্দরী মেয়ে।
মানুষ সুন্দর হতে কতো কিছুই না করে। আর এই কালো বা ফর্সার বৈষম্য মনে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় আমাদের শৈশব থেকেই। রূপকথার গল্পে শিশুরা পড়ে রানি আর রাজকন্যার দুধে-আলতা গায়ের রং, মেঘবরণ চুল, টানা টানা ডাগর ডাগর চোখ । অন্যদিকে রাক্ষুসী হয় কালো রংয়ের। ছোটবেলায়ই কার্টুনের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় মেয়ে বন্ধুটি ফর্সা আর সুন্দর। সিনডেরেলা ফর্সা। গোপাল ভাঁড়ের গল্পে রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের রানীও ফর্সা।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নারীরাই নারীদের গায়ের রং নিয়ে বেশি তামাশা করে। কথাটি অস্বীকার করার উপায় নেই। নারীরাই অনেকসময় পুরুষতন্ত্রের ধারক বাহক। যুগ যুগ ধরে গড়ে ওঠা নারীর এই মনোভাব তো এমনি এমনি গড়ে ওঠেনি। পুরুষতান্ত্রিক ভোগবাদী সমাজই অনেক নারীর মনে সেই বীজ বুনে দিয়েছে। অনেক উচ্চশিক্ষিত নারীকে দেখি কি করে নিজেকে আকর্ষণীয় সুন্দরী করা যায় তা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে। কি করে নিজেকে বাচ্চা বাচ্চা মেয়ে করে উপস্থাপন করা যায়। আবার ছেলের মায়েরা ফর্সা সুন্দরী বউ খোঁজেন ছেলের জন্য।
“নিজের প্রতি শ্রদ্ধা মনের মাংসপেশি। তাহা মনকে উর্ধ্বে খাড়া করিয়া রাখে এবং কর্মের প্রতি চালনা করে। যে জাতি নিজের প্রতি শ্রদ্ধা হারাইতে বসে, সে চলৎশক্তি রহিত হইয়া পড়ে।”
– চিঠিপত্র ৬ । আচার্য জগদীশচন্দ্রের জয়বার্তা।
নারী যত ফর্সা বা সুন্দর হয়, সমাজে তাঁর কদর তত বেশি। সমাজের প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী গায়ের রং নারীর সকল সৌন্দর্য বিচারের মাপকাঠি। আমাদের মনোজগতে চিন্তাচেতনার মধ্যেই ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে কালো মানেই অসুন্দর। কালো মানেই ভয়। কালো মানেই অমঙ্গল। ভুত কালো হয়। কালো রঙের মানুষকে কালো ছাগলের সাথে তুলনা করা হয়। কালো বিড়াল মানেই অশুভ। সেই ধারণাকে আমরা মিলিয়ে ফেলি গায়ের রঙের সঙ্গে। আর তা বেশি করে ঘটে নারীদের ক্ষেত্রেই । গায়ের রং কালো বলে কোনো নারীর সন্তান কালো হলে সেই নারীকে সারাজীবন কথা শুনতে হয়।
পৃথিবীতে কালো আর সাদা মানুষের বৈষম্য শত শত বছর যাবত বিদ্যমান। এ বৈষম্য যেন একে অপরের প্রতি ঘৃণা আর হিংসাকে চরমভাবে ছড়িয়ে দিচ্ছে। কোথায় নেই এই বর্ণবাদ! পরিবারের থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস, ক্লাসরুম, অফিস-আদালত, কর্পোরেট অফিস পর্যন্ত বর্ণবাদ অনুপ্রবেশ করেছে।
আর নয় সাদা-কালোর পার্থক্য, নয় কোনো ঘৃণা, রক্তপাত ও হিংসা-বিদ্বেষের ছড়াছড়ি। সারা বিশ্বে মানুষের জন্য, মানুষের দ্বারা তৈরি হোক বর্ণবাদহীন মানবতার সমাজ ও মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন রাষ্ট্র ব্যবস্থা। যেখানে সকল মানুষ আনন্দ, সম্মান আর আত্মবিশ্বাস নিয়ে নিরাপদে বসবাস করবে।
লেখকঃ একজন উন্নয়নকর্মী।

এই বিভাগের অন্য সংবাদ
কপিরাইট ২০২০ © বর্তমান বাংলা ২৪ ডট কম
হোস্ট ও ডেভেলপমেন্ট লক্ষ্মীপুর ওয়েব সলুয়েশন
Share via
Copy link