বর্তমান বাংলা টুয়েন্টিফোর ডেস্কঃ সেবার অনেক তর্ক হচ্ছিল, বলা হচ্ছিল আপনারা “নিরপেক্ষ” থাকুন। বাসায় ফিরে ভাবলাম “নিরপেক্ষতার” অর্থ কি? অনেক খোঁজাখুঁজি করলাম কিন্তু কোনও সরল সংজ্ঞা পাই নাই। সর্বশেষ এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলাম যে, নিরপেক্ষতার অর্থ হচ্ছে “আপনার চারখানি হাত পা আছে, দুইখানি চোখ আছে, একখানি মুখ আছে দুটো কান আছে এবং একটি মাথা আছে কিন্তু মগজ নাই, শরীরে কোন বিশুদ্ধ রক্ত নাই” অথচ পশু এই অপেক্ষা অতি উত্তম।
রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার কোনরূপ ইচ্ছা আমার ছিল না। আমার পরিবারের যে ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয়। আমাদের একেক ভাই আট-দশ বছর করে জেল খেটেছেন, পদ-পদ পাননি, ৫ লক্ষ টাকার মালিক হননি। ২০০১ সালের পর আমার মা’কে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারের পর ব্রেন স্ট্রোক করে তিনি মারা গিয়েছেন। সর্বশেষ হাইব্রিড দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়ে বাড়ি-ঘর ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে। আমরা মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি, অথচ ৯১ থেকে ৯৫ এবং ২০০১ থেকে ২০০৫ দেখেছি। সেসময় জনাব শেখ সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম ভাই, জয়নাল হাজারীসহ অনেকে আমাদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু ২০০৬-এর পর অকাল গ্রাস শুধু আমার পরিবারকে নয় লক্ষ্মীপুরের শত শত পরিবারকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ আমলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সবচেয়ে বেশি খুন হয়েছে লক্ষ্মীপুরে। হাইব্রিড-দুষ্টচক্র সর্বত্র দখল করে নিয়েছে। পদ-পদবী ব্যবহার করে হাজার কোটি টাকার মালিক বনে গিয়েছে। টাকা-পদ-ক্ষমতা একটি সংঘবদ্ধ গোষ্ঠীর কাছে জিম্মি হয়ে গেছে। এসব কারণে আমার মনো বাসনা ছিল “আই হেট পলিটিক্স”।
কিন্তু আরেকটি মুক্তিযুদ্ধ ঘটে গেলো ২০১৯ সালের ২৩শে নভেম্বর। বাংলার যুব সমাজের আলোকবর্তিকা, বাংলার অহংকার, যুব জাগরণের কাণ্ডারি শেখ ফজলুল হক মনির সুযোগ্য সন্তান মানবিক যুবলীগের স্বপ্নদ্রষ্টা শেখ ফজলে শামস পরশ যখন ঘোষণা দিলেন যারা “আই হেট পলিটিক্স” ধারণা পোষণ করেন তাদের জন্য আমি আছি। আমি অ-নিরপেক্ষতার গন্ধ খুঁজে পেলাম, সাহস পেলাম, আপোষহীন নেতার ডাক পেলাম। তারপর নবযাত্রা। আমাদের নেতা শেখ ফজলে শামস পরশ যখন ঘোষণা দেন আমি “নিষ্পেষিত-বঞ্চিত-অবহেলিত নেতাকর্মীদের জন্য”-তখন বুকটা কেঁপে উঠে। বুকটা কাঁপে তাদের জন্য যারা পদ-পদবী ব্যবহার করে হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন এবং হাজার কোটি টাকার মালিক হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন, বুকটা কাঁপে তাদের জন্য যারা এখনো দলকে সংগঠনকে বিক্রি করে চলছেন। আর আশার বাণী-স্বপ্ন দেখি তাদের জন্য যারা আমার এবং আমার পরিবারের মতো নিষ্পেষিত-অবহেলিত এবং নির্যাতিত।
পেশায় আমি একজন আইনজীবী, যারা আমাকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন তারা জানেন আমি কতটুক নিষ্ঠা এবং সততার সহিত জীবন যাপন করি। ১৬ ঘণ্টাই কাজ করি। বাসা এবং চেম্বার মিলে আমার পরিশ্রমের প্রাপ্য এতোটুকু যে “আমি সৎ”। কসম করে বলতে পারি সারাটা জীবনই সৎ এবং নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে যাব, তাদের জন্যই দায়িত্ব পালন করে যাব যারা বঞ্চিত-অবহেলিত।
তাই আমি হলফ করে বলতে পারি “আমি নিরপেক্ষ নই”। আমাদের নেতা শেখ ফজলে শামস পরশ-এর আদর্শে দীক্ষিত হয়ে ওয়াদা করছি,“আমিও অবহেলিত-নির্যাতিত এবং বঞ্চিতদের পক্ষে”।
প্রকাশের তারিখঃ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১।
লেখকঃ সহ-সম্পাদক,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি।